শ্রীধনঞ্জয় দাস পত্রামৃত

ওঁ হরিঃ
শ্রীবৃন্দাবন
১৭/১০/৪০
পরমকল্যাণবরেষু
প্রিয় !
….
উপদেশমত নিয়মানুসারে স্থিরচিত্তে ভজন করিতে থাকিলে ধীরে ধীরে ভক্তি ও বিশ্বাস আসিতে থাকিবে। বহু জন্মের সংস্কারের দ্বারা চিত্ত কলুষিত হইয়া আছে, ভজন করিতে করিতে সেই সংস্কারের ময়লা দূরীভূত হইয়া যে পরিমাণে চিত্ত নির্ম্মল হইতে থাকিবে, সেই পরিমাণে ভক্তি ও বিশ্বাস গাঢ় হইতে থাকিবে। ব্যস্ত হইওনা। স্থিরচিত্তে ভজন করিতে অভ্যাস কর, শ্রীভগবৎকৃপায় কল্যাণ লাভ করিবে। যিনি যত ব্যস্ত হইবেন, তাহার তত বিলম্ব হইয়া যাইবে। সব অবস্থাই ভগবদ্দত্ত-জ্ঞানে গ্রহণ করিয়া, সর্ব্বদা চিত্তকে প্রসন্ন রাখিতে অভ্যাস যিনি করেন এবং গুরূপদিষ্ট মার্গে চলিতে থাকেন, তিনি খুব শীঘ্র শীঘ্র সাধনপথে অগ্রসর হয়েন। “পত্রাবলী” মধ্যে মধ্যে পড়িয়া উপদেশানুসারে চলিতে অভ্যাস করিবে।

মাথা নীচে রাখিয়া এবং পা উপরে তুলিয়া ধ্যান করিলে আধঘণ্টায় সমাধি হয় এইরূপ কেহ বলিয়াছে লিখিয়াছ। এইরূপ সম্ভব হইলে সমাধিসম্পন্ন পুরুষে সংসার ভরিয়া যাইত। তাহা হইলে মুনি ঋষিরা সহস্র সহস্র বৎসর ধরিয়া এত কষ্টের সহিত সাধন করিতে যাইতেন না। এইরূপ কথা শুনিয়া তোমার মত লোকও ভুলিয়া যাও ইহা ভাল নহে। এইরূপ কাহারও কথায় কোন সময় পড়িয়া গেলে অনেক সময় মহা বিপদে পড়িতে হইতে পারে। খুব সাবধানে চলিবে। যাহার তাহার উপদেশ গ্রহণ করিতে যাইও না। তুমি যেরূপ উপদেশ পাইয়াছ‌ এবং পত্রাবলী প্রভৃতিতে যে উপদেশ আছে তৎসমস্ত অবলম্বন করিয়া চলিবে। শ্রীভগবানের উপর নির্ভর করিয়া স্থির-ধীর ভাবে ঋণ পরিশোধের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করিতে থাক। ভগবদ্দিচ্ছা হইলে তাঁহার কৃপা আসিয়া সাহায্য করিতে পারে। তোমরা কল্যাণ লাভ কর এই ইচ্ছা করি। তোমরা সকলে আমার আশীর্ব্বাদ জানিবে। ইতি-
আশীর্ব্বাদক
শ্রীধনঞ্জয়দাস

অনুলিখন- শ্রী বিশ্বনাথ রায়।